অলসতা কী? কিভাবে ইহা দূর করবেন? স্মার্ট টিপস

“যত দিন যাচ্ছে ততই যেনো অলস হয়ে যাচ্ছি। না ভালো লাগে পড়তে না ভালো লাগে খেলতে। সারাদিন শুধু মোবাইল নিয়ে শুয়ে শুয়ে দিন কাটে। সত্যিই আর ভালো লাগছে না। কিন্তু কী বা করবো বদলাতে তো চাই কিন্তু কোনো উপায় খুজে পাচ্ছি না।”

যদি আপনার সমস্যা একই হয় তাহলে এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ে দেখুন। আশা করি আপনি খুব সহজেই আপনার সমাধান আপনি পেয়ে যাবেন। আজ এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো যে অলসতা আসলে কী? এটা কী আমাদের মস্তিষ্কের কোনো ছলনা নাকি জ্বীনগত ব্যাপার। তারপরেও আমি অলসতা দূর করার জন্য কিছু এরকম স্মার্ট আইডিয়া শেয়ার করবো যেগুলো অভ্যাস করা অত্যন্ত সোজা আর এগুলো অসম্ভব উপকারী। তো চলুন শুরু করা যাক আজকের এই আর্টিকেলটি।

অলসতা কী? কিভাবে ইহা দূর করবেন? স্মার্ট টিপস
অলসতা কী? কিভাবে ইহা দূর করবেন? স্মার্ট টিপস

Table of Contents

অলসতা কী?

প্রথমেই বলি যে অলসতা কী বা কোথা থেকে আসলো? আমাদের পূর্ব পূরুষরা যখন জঙ্গলে বসবাস করতেন তখন তাদের কোন নিশ্চয়তা ছিলো না যে পরবর্তি খাবার টা কোথায়  বা ঠিক কোন সময় পাবেন। এরপর কখন তার উপর জীব জন্তু আক্রমন করতে চলেছে। তাই তাদের এসব কোনো কিছুর খেয়াল ছিলো না দেখে সারাদিন শুয়ে বসে দিন কাটাতো। তারা তাদের সময় ৮০ ভাগ অলসতা আর ২০ ভাগ এক্টিভ ছিলো। সেই কারণে সময়ের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু পূর্ব পূরুষদের অভ্যাস ঠিকই আমাদের মাঝে রয়ে গেছে। এই কারণেই আমরা দিনের ৮০ ভাগ সময় অলসতা করে কাটাই আর বাকি ২০ ভাগ অলসতা ছাড়া ভালো ভাবে এক্টিভলি কাজ করি।

আরো পড়ুন: মেয়ে পটানোর টিপস | কিভাবে মেয়ে পটাবেন? | নিঞ্জা টিপস

এখন সমস্যাটা হচ্ছে আমাদের মধ্যে অনেকেরই এটি ৮০/২০ ভাগ থেকে ৯৯/১ ভাগে এসে দাড়িয়েছে। তো এটাকে কী করে বদলানো যায়? তো এর আগে জেনে অলসতাটা কীভাবে আমাদের মস্তিষ্কে কাজ করে? আমাদের শরীরে একটা ডোপামিন নামে একটা হরমোন ঘঠিত হয় যেটা আমাদের পুরো মস্তিষ্ককে কন্ট্রোল করে। এটাকে আবার আমাদের মস্তিষ্কের রিওয়ার্ড সার্কেটারিও বলা হয়। ফেসবুক চালাতে কী কখনো অলসতা ফিল করি? ফ্রি ফায়ার খেলতে কী অলসতা অনুভব করি? না। ঘন্টার পর পর ঘন্টা এক নাগারে খেলে যায়। কিন্তু বই পড়ার ব্যাপারে ৫মিনিট ও তখন ৫ ঘন্টার সমান লাগে। এইরকম কেনো হয়? আমরা যখন ফেসবুক চালাই বা গেইম খেলি তখন ব্রেইনের রিওয়ার্ড সার্কিট এক্টিভ হয়ে যায়। কারণ এটা থেকে আমরা আনন্দ ভোগ করি। কিছু সময় পর পর আমাদের মস্তিষ্ক রিওয়ার্ড পায়। এবং ডোপামিন হরমোনের নিঃস্বরণকে বাড়িয়ে দেয় যার ফলে  ক্রমাগত বেশ একটা ভালো অনুভুতি ফিল করতে পারি। এবং ধীরে ধীরে সেটার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ি।

এই পোস্ট আপনার জন্য: অনলাইনে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন যাচাই করার নিয়ম | কাবিন নামা অনলাইন চেক

ঠিক একই কারণে আমরা পরীক্ষার আগে ভালো করে পড়তে বসি আর ইচ্ছা শক্তিটাও জাগে। কারণ তখন সেই সার্কিট টা অনুভব করে এখন যদি ভালো করে পড়ি পরীক্ষায় ভালো করতে পারবো। আর এতে করে আমাদের রিওয়ার্ড সার্কিটটি এক্টিভেট করে দেয়।

অলস নিয়ে উইকিপিডিয়ার আর্টিকেল টি পড়ুন: অলস নিয়ে জানুন।

কিভাবে অলসতা দূর করবেন?

অলসতা দূর করার জন্য আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত যে কীভাবে আমরা আমাদের ব্রেইন বা রিওয়ার্ড সার্কিটটাকে সবসময় এক্টিভ রাখতে পারি। আর ঠিক এইটুকু করতে পারলেই আমরা গোড়া থেকে আমাদের অলসতা কিছুটা হলে দূর করতে পারি। এগুলো করার অনেকগুলো উপায় আছে কিন্তু এর মধ্যে ৮৫% ভাগ উপায়ই ইমপ্রেকটিকাল। যা আমরা সহজেই পারবো না। কিন্তু যেই ১৫% উপায় রয়েছে সেটা খুবই সিম্পল আর অনেক সোজা। আমি তার মধ্যে থেকে কিছু উপায় এখানে উল্লেখ করবো।

পড়তে পারেন: কালো মেয়ে বিয়ে করার উপকারিতা – কালো মেয়েরা কেমন হয়?

বিছানা ত্যাগ করুন:

আমরা সারাদিন যেই যেই কাজ করি এই সবগুলো হয় আমাদের সাবকন্সেন্স মাইন্ড দ্বারা অর্থাৎ আমাদের সেগুলো ভেবে ভেবে করতে হয় না অটোমেটিক আমরা করে ফেলি। এখন কথা হচ্ছে যেই বিছানাই আপনি ঘুমান সেই বিছানাই যদি আপনি সাতদিন শুয়ে বসে কাটান  তখন আপনার মস্তিষ্ক মেসেজ দিতে থাকবে এটা মনে হয় ঘুমের সময়। কারণ সাবকন্সেন্স মাইন্ড কনফিউস হতে থাকে এবং সিগনাল দিতে থাকে ঘুমের জন্য। এক্ষেত্রে সারাদিন আপনি অলসতা অনুভব করেন।

এরজন্য আপনাকে অভ্যাস পাল্টাতে হবে। আপনি যখন ঘুম থেকে উঠেন তখন দ্বিত্বিয় বারের মতো বিছানাই শুতে যাবেন না সাথে সোফা কেও avoid করুন। অর্থাৎ এমন কোনো জায়গায় থাকা যাবে না যেটাতে থাকলে আপনার মস্তিষ্ক ঘুমের সিগনাল দিতে থাকবে আর সাব কন্সেন্স মাইন্ড কনফিউস হতে থাকবে। তাই আমি সাজেস্ট করবো যেকোনো কাজ করার সময় মেজেতে বসে করুন। এতে অলসতা কাটিয়ে উঠতে পারবেন। এতে আপনার শরীরও ফিট থাকবে।

 অনুশীলন করুন: 

অলসতা মূলতো দুই ধরণের একটা শারিরিক আরেকটা মানসিক। শারিরিক অলসতা দূর না করে মানসিক অলসতা দূর করা যায় না। তাই আগে শারিরিক অলসতা দূর করুন। এর জন্য সময় সময় ব্যায়াম করুন।

অনেক লোক আছে যারা দেখবেন ব্যায়াম এর প্রতি আসক্ত। তাদের ব্যায়াম না করলে যেনো চলে না।

ফুড সেন্স এন্ড এক্সেরসাইজ এ দুটি জিনিস আমাদের ব্রেইনের ডোপামিন এ সবথেকে বেশী ইন্টামেন্স করে থাকে। যে যেই জিনিসটার প্রতি লিংক করে থাকে সে সেই জিনিসটা ততো বেশী উপভোগ করতে থাকে। এবং ধীরে ধীরে সেটার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। exercise ও অনেক বেশী উপকারি আর এটিও বাকিগুলোর মতো আসক্ত করে তুলতে পারে। তাই আপনি যদি কিছুদিন exercise করে আপনাকে অভ্যাস করে ফেলতে পারেন  তাহলে তো কাজ হাসিল। অলসতা তো দূর হবে হবেই তার সাথে আপনি সুস্থ সবল থাকতে পারবেন।

নিজেকে পুরষ্কৃত করুন: 

আমাদের প্রদান কাজ হলো ব্রেইনের সার্কিটকে কাজে লাগানো। কিন্তু পড়ার ক্ষেত্রে এক্টিভেট হতে চায় না। তো এক্ষেত্রে কীভাবে এক্টিভেট করবো। শুধু পড়ালেখা না? ধরেন আপনি কাজ করছেন সে ক্ষেত্রেও আপনি এটি মেনে চলতে পারেন। এই জন্য আপনাকে ওই কাজটার জন্য অর্থাৎ যেই কাজটা করতে অলসতা করছেন ওই কাজটার জন্য নিজেকে নিজেই রিওয়ার্ড দিতে হবে।

নিজেকে নিজে কীভাবে রিওয়ার্ড দিবো? ধরেন আপনি বই পড়ছেন আপনাকে ১০টা প্যারাগ্রাফ মুখস্ত করতে হবে। এখন আপনার মন চাচ্ছে না এটা শিখার জন্য। তাই আপনি নিজে নিজকেই বলুন ৩টা শিখতে পারলে কিছু একটা খাবেন। মানে আপনার ফেভারিট কিছু। ঠিক এরকম করে ১০টার জন্য তিনবার নিজেকে রিওয়ার্ড দিন। এতে দেখবেন আপনার ব্রেইন অলসতা করছে না বরং এটি আরও পড়ার আগ্রহ বাড়িয়ে তুলছে।

আপনার এক্সাম আছে সামনে অধ্যায় গুলো শেষ করেন নাই। এমতাবস্থায় আপনি একটা কাজ করতে পারেন। প্রতি অধ্যায় শেষ করার জন্য নিজেকে বলুন ফেভারিট খাবার বিরিয়ানী খাবেন। এতে করে খুব সহজেই আপনার পড়াগুলো শেষ করে ফেলতে পারবেন। এর জন্য নিজের প্রতি একটু ডিসিপ্লিন মেনে চললেই হবে।

আন্তরিকতা এবং আনন্দের সাথে থাকুন:

আমরা অনেক সময় কাজ করি যেটাতে আমাদের বিন্দু মাত্র ইন্টারেস্ট থাকে না। এর কারণে সেই কাজটিতে অলসতা দেখা যায়। এর একটা উপায় হলো এরকম কোনো কাজই না করা যেটাতে কোনো ইন্টারেস্ট থাকে না। কিন্তু এটা তো সম্ভব নয়। যেমন আমি একজন স্টুডেন্ট হয় আর এর জন্য তো আমাকে পড়তেই হবে সেটাতে ইন্টারেস্ট থাকুক বা না থাকুক। ঠিক এরকম কিছু বিশেষ কাজ থাকে যটা ইগনোর করা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে আমাদের অন্য উপায় বের করতে হবে, এমন কিছু উপায় বের করতে হবে যাতে করে বোরিং কোনো কিছু ইন্টারেসটিং লাগতে শুরু করে। এর মধ্যেই আমি একটা উপায় তো আগেই বললাম reward yourself আর আরেকটি উপায় হচ্ছে try it differently.

অনেকেই হতে পারে তারা বই পড়তে ভালো লাগে না কিন্তু শুনতে ভালোবাসে। বা হতে পারে তার ভিডিও দেখতে ভালো লাগে। তো তাই সে তার সুবিধা মতো ইউটিউব টিউশন দেখতে পারে। এতে করে তার পড়ার আগ্রহটা থাকবে। যখন আমরা কোনো কিছু করার ইন্টারস্ট পাই তখন অলসতা অনেকটা দূর হয়ে যায়। মহান কেউ একজন বলেছেন এই বাণীটি।

“Everything is easy-

When you are crazy.”

              and

“Nothing Is easy-

When you are Lazy”

 শেষকথা:

প্রিয় পাঠক, এখানে অলসতা নিয়ে চারটি স্মার্ট আইডিয়া দিয়েছি সেটি থেকে যেকোনো একটা বেছে নিয়ে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারে। এভাবে এক সপ্তাহ অনুসরণ করে কোনো পরিবর্তন অনুসরণ হচ্ছে কি না এখানে কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করি পোস্টটি ভালো লাগছে আপনাদের কাছে।

About admin

Check Also

অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ খেলে কী হয়?

অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ খেলে কী হয়?

যদি কেউ না জানেন যে অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ খেলে কী হয়? তাহলে এই পোস্ট আপনার …