পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট দেশ কোনটি?

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট দেশ কোনটি?

পৃথিবীর সব থেকে ছোট দেশ হলো সিল্যান্ড।
ইংরেজিতে এ ধরনের সত্তাকে বলা হয় মাইক্রোন্যাশন। বাংলায় যাকে বলা যায় অনুরাষ্ট্র। বিশ্বের অন্য কোন দেশ শ্রীলঙ্কাকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে এখনো পর্যন্ত পৃথিবীর সব থেকে ছোট দেশ হল ভ্যাটিকান সিটি।

তবে সংঙ্গা মতে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের যা যা থাকা দরকার তার সবই আছে সিল্যান্ডে। ক্ষুদ্র এই দেশটির প্রাতিষ্ঠানিক নাম হল প্রিন্সিপালিটি অফ সিল্যান্ড।

সাগরের উপর ভাসমান এই দেশটি বিশাল দুটি কংক্রিটের পিলারের ওপর অবস্থিত। ইংল্যান্ডের উত্তর উপকুল থেকে 10 কিলোমিটার দূরে গভীর সমুদ্রে অবস্থিত সিল্যান্ড এর আয়তন প্রায় ছয় হাজার বর্গফুট।

মজার ব্যাপার হলো ক্ষুদ্র এই দেশটির একটি রাজধানীও রয়েছে।
সিল্যান্ডের রাজধানীর নাম Hm Fort Roughs. সিল্যান্ড ই একমাত্র দেশ যার কোন মাটি নেই।
কংক্রিটের পিলার দুটির উপর বসানো ইস্পাত এর পাটাতন টিই হলো দেশটির সার্বভৌম এলাকা।
দেশটিতে একটিমাত্র বাড়ি রয়েছে। আর এটি হলো সিল্যান্ড এর রাজপ্রাসাদ।
রাজপ্রাসাদের উপর উড়তে দেখা যায় এই দেশটির নিজস্ব পতাকা। সিলেন্ডার প্রচলিত ভাষা হল ইংরেজি এবং মুদ্রার নাম সিল্যান্ড ডলার। সিল্যান্ড কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী তাদের ডলারের মান আমেরিকার ডলারের সমমূল্যের হলেও বাইরের কোন দেশে এই মুদ্রা চলে না।
এছাড়া সিল্যান্ডের নাগরিকদের জন্য নিজস্ব পাসপোর্ট ও রয়েছে। সিল্যান্ডের এই অবকাঠামো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশরা তৈরি করেছিল।
জার্মানরা যেকোনো সময় ইংল্যান্ডে আক্রমণ করতে পারে। এ ধরনের আশঙ্কা থেকে ব্রিটিশ সেনা ও নৌ বাহিনী ইংল্যান্ডের উপকূল ভাগে বেশ কয়েকটি সমুদ্র দুর্গো নির্মাণ করেন। এসব দুর্গ থেকে শত্রুদের যুদ্ধজাহাজ গুলোর উপর নজরদারি করা হতো।প্রয়োজনে সেসব জাহাজে আক্রমণের ব্যবস্থাও ছিল।

আরো পড়ুনঃ পাসপোর্ট করার নিয়ম – সহজেই পাসপোর্ট আবেদন শিখে নিন নিজেই -2022

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পর ব্রিটিশ বাহিনীরা নিজেরাই কিছু দুর্গো বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়। আর কিছু দুর্গো পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখে।
পরবর্তীতে 1967 সালের 2 সেপ্টেম্বর সাবেক ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা মেজর প্যাডিরায় বেডস এবং তার পরিবার এই জায়গাটি দখল করে।
তারপর তারা একে একটি স্বাধীন মাইক্রো রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেয়।

পৃথিবীর কোনো দেশ এখনো পর্যন্ত সিল্যান্ডকে দেশ হিসেবে স্বীকৃতি না দিলেও কোন রাষ্ট্র তাদের বিরোধিতাও করেনি।

অতীতে জার্মান দুর্বৃত্তরা সিল্যান্ড আক্রমণ করে দেশটির রাজপুত্রকে অপহরণ করেছিল তারপর থেকে এখানে নিরাপত্তারক্ষী নিযুক্ত হয়।

সিল্যান্ডের নিরাপত্তারক্ষী সহো দেশটির মোট জনসংখ্যা মাত্র 27 জন।
বাইরে থেকে দেখতে অবশ্য অবকাঠামোটি যে 27 জনের বসবাসযোগ্য সেটা মনে হয় না। তবে এর ভেতরে বসবাস করার মতো পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে।
কংক্রিটের পিলার দুটির মধ্যেও রয়েছে অসংখ্য রুম।অতীতে সব ঘরে ব্রিটিশ সৈন্যরা অবস্থান করতো।

বর্তমানে সিল্যান্ডের নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সকল জিনিসপত্র সংগ্রহ করা হয় নিকটবর্তী ইংল্যান্ডের মধ্য থেকে। তাছাড়া সিল্যান্ড এর ভেতরে রয়েছে পানীয় জলের ব্যবস্থা এবং দেশটির বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য রয়েছে নিজস্ব জেনারেটর।

পর্যটক হিসেবে চাইলেই আপনি সিল্যান্ডে যেতে পারবেন না।তাই দেশটির কর্তৃপক্ষ আগ্রহীদেরকে তাদের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখার অনুরোধ করেন। তাছাড়া চাইলেই আপনি সিল্যান্ডের ওয়েবসাইট থেকে সম্মান সূচক পদবী, পরিচয় পত্র এবং বিভিন্ন ধরনের সিল্যান্ডি পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। এমনকি 10 বছরের জন্য সিল্যান্ডের কয়েক ইঞ্চি জায়গা কেনার সুযোগ আছে।
কিন্তু সে জায়গাটিতে আপনি কখনোই সশরীরে যেতে পারবেন না।

About admin

Check Also

অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ খেলে কী হয়?

অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ খেলে কী হয়?

যদি কেউ না জানেন যে অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ খেলে কী হয়? তাহলে এই পোস্ট আপনার …