বৃষ্টির দোয়া – বর্জপাতের সময় কোন দোয়াটি পড়তে হয়?

বৃষ্টির দোয়া – বৃষ্টি হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে তার বান্দাদের জন্য রহমত। বৃষ্টি আসে আল্লাহর হুকুমে আর এটা বন্ধও হয় আল্লাহর হুকুম দেয়ার মধ্যে। কখন কোথায় বৃষ্টি লাগবে সেটা আল্লাহ ছাড়া কেউই জানে না। আল্লাহ বৃষ্টি দিয়ে মানব জাতির শস্য গাছ পালা পশু পাখি মানুষ সকল জীবের ভালোর জন্য দিয়ে থাকেন।

আবার বৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহর গজব ও নাজিল করেন। নবী করিম (সঃ) মেঘ মালা দেখলে খুব চিন্তায় পরে যেতেন কারন বৃষ্টির মধ্যে রয়েছে রহমত এবং গজব দুইটাই। নবী করিম (সঃ) তখন আল্লাহর কাছে দোয়া করে বলতেন – হে, আল্লাহ! আপনি আমার উম্মতের উপর রহমতের বৃষ্টি দান করুন। আর গজবের বৃষ্টি আমার উম্মতের উপর দিয়েন না, সুবহানাল্লাহ। কিন্তু আমাদের বর্তমান জামানায় দেখা যায় হঠাৎ করে ঝড় বৃষ্টি এসে পরে । তখন আমাদের বেশী বেশী বৃষ্টির দোয়া পড়া উচিত। 

এর আসল কারন হলো আল্লাহর তায়ালা আমাদের উপর নারাজ হয়ে যেখানে বৃষ্টি না লাগে সেখানে ও বৃষ্টি দেন আবার সেখানে বৃষ্টি প্রয়োজন সেখানে বৃষ্টি দেন না। এর কারণ আমরা ঠিক মতো আল্লাহর হুকুম আহকাম মেনে চলি না। তার ইবাদত করি না আল্লাহর হুকুম আহকাম না মেনে চলার কারনে আল্লাহ আমাদের উপর এমন গজব দেন। তাই আমাদের উচিত আল্লাহর হুকুম আহকাম ঠিক ঠাক মতো মেনে চলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা এবং নবী করিম সঃ এর সুন্নতের উপর অটল থাকা।

আরো পড়ুন – কবর জিয়ারত করার নিয়ম

আজকে আমরা আলোচনা করবো ঝড় বৃষ্টির সময় কি দোয়া করবো এবং কেন আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য বৃষ্টি দেয়। বৃষ্টির দোয়া  বাংলা উচ্চারণ। 

বৃষ্টির দোয়া

মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তার বান্দাদের কে পরিক্ষা করার জন্য অনেক বিপদ আপদ বালা মুসিবত দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ । আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আমাদের কে তার রহমত দিয়ে এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করুন আমিন। আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন কুরআন মাজিদের মধ্যে বলেনঃ আমি জলধারা ও মেঘমালা থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত দেই, যা দ্বারা তৈরি করি শস্য উদ্ভিদ ও পাতাঘন উধ্যান। ( সূরা নাবা আয়াত নং ১৪ থেকে ১৬)

বৃষ্টি হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত কিন্তু কখনো কখনো বৃষ্টি কে আল্লাহ তায়ালা গজব স্বরুপ বর্ষন করেন। এজন্য আমাদের উচিৎ বৃষ্টির সময় বৃষ্টির দোয়া পড়া।

আরো পড়ুন- সহীহ হাদিস কাকে বলে – হাদিস সহিহ হওয়ার 5 টি শর্ত?

নবী করিম সঃ বৃষ্টির সময় যে দোয়া পাঠ করতেন

হযরত আয়েশা রাঃ হতে বর্নিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাঃ কে দেখেছি যখনি আকাশে মেঘমালা আর ঝড়ো হওয়া বইতো তখন তার কপালে চিন্তার রেখা দেখতে পেতাম। এই অবস্থা দেখে তিনি ঘরের ভিতর পায়চারি করতেন এবং আল্লাহর কাছে  বৃষ্টির দোয়া করতেন।

বৃষ্টির দোয়া বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুমা ইন্নী আসআলুকা খইরহা ওয়া খইরা মা-ফিহা ওয়া খইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা-ফিহা ওয়া শাররি মা-উরসিলাত বিহি।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে এ বৃষ্টি থেকে কল্যান কামনা করছি। এই বৃষ্টিতে যে সব কল্যান রয়েছে সে গুলো কমনা করছি, আর এ বৃষ্টি ও বৃষ্টির মধ্যে যে সকল অকল্যান রয়েছে তা থেকে পরিত্রাণ চাচ্ছি।

আরো পড়ুন- পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের ফজিলত ও সময়সূচী

আর এর পর যখন বৃষ্টি শুরু হইত তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) শান্ত হতেন। এর পর আমি রাসুলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞেস করছি যখন আকাশে মেঘমালা দেখা যায় তখন সকল মানুষ আনন্দিত হয় আর আপনি কেন এতো চিন্তিত থাকেন? জবাবে রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন আমি এই ভেবে চিন্তিত থাকি যে আল্লাহ পাক আমার উম্মতের উপর বৃষ্টি কে আজাব রুপে পতিত না করেন। কেননা আগের উম্মদের উপর এই রুপে ( বৃষ্টি দিয়ে) আজাব পতিত হয়েছিল। (বুখারী,৩০২৬, মুসলিম, ৮৯৯, তিরমিজি, ৩৪৪৯)।

বর্জপাতের দোয়া

আমরা অনেকেই বর্জপাতের সময়ে ভয়ে হাপাতে থাকি।  গুগলে বর্জপাতের দোয়া লিখে সার্চ করে থাকি।  যারা বৃষ্টির সময় বর্জপাত হলে কোন দোয়া পড়তে হয় জানেন না তারা বর্জপাতের দোয়া টি দেখে নিন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহু যখন মেঘের গর্জন শুনতেন তখন চুপ হয়ে যেতেন এবং এই আয়াত পাঠ করতেন,

আরবীর বাংলা উচ্চারণঃ সুবহানাল্লাজি ইউসাবিহুর রা’দু বিহামদিহি ওয়াল মালাইকাতু মিন খিফাতিহি।

শেষ কথা

বৃষ্টির দোয়া পোষ্টে আপনাদের বাংলা উচ্চারণ সহ দিয়ে দিলাম।  আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আমাদের সকল বিপদ আপদ বালা মুসিবত থেকে রক্ষা করুন আমিন। এবং সকল প্রকারের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে হিফাজত করুন এবং বৃষ্টি কে আমাদের জন্য রহমত হিসাবে পতিত করুন আমিন।

আরো পড়ুন- তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম – 2022

About admin

Check Also

জুমার নামাজের নিয়ত

জুমার নামাজের নিয়ত, নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত

আপনি যদি জুমার নামাজের নিয়ত না জানেন তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য। জুমার নামাজ প্রতি …